১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | বিকাল ৩:৩০
Home / প্রচ্ছদ / ঢাবির আন্দোলনের গতিপথ পাল্টেছে

ঢাবির আন্দোলনের গতিপথ পাল্টেছে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন করে অধিভুক্ত হওয়া রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলনের গতিপথ পাল্টেছে। এবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি উঠেছে। শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রশাসন আর সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে পুলিশের সম্পৃক্ততা যুক্ত হওয়ায় দাবি পরিবর্তিত হচ্ছে।

প্রক্টরের কার্যালয়ের ফটক ভাঙচুরের ঘটনায় মামলার পর শিক্ষার্থীরা তিনটি সুনির্দিষ্ট দাবিতে একত্র হয়েছেন। তাঁদের দাবি, ‘সন্ত্রাসী হামলা ও যৌন নিপীড়নের সঙ্গে চিহ্নিত’ ছাত্রলীগ নেতাদের আজীবন বহিষ্কার, শিক্ষার্থীদের নামে ‘হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার অথবা ‘মামলাবাজ’ প্রক্টরের পদত্যাগ এবং অধিভুক্ত সাত কলেজ নিয়ে বিদ্যমান সংকট নিরসন।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ এক ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মশাল মিছিল শেষে এসব দাবির ঘোষণা আসে। মিছিলে বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী, ডাকসুর দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। মিছিলটি রাজু ভাস্কর্য থেকে শুরু হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে শেষ হয়। সেখানে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আসিফ মোহাম্মদ নতুন দাবিগুলো তুলে ধরেন।

আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম গোলাম রব্বানীর পদত্যাগের দাবি যুক্ত হয় গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন প্রশাসন প্রক্টরকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং কলাভবনের ফটক ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করে। এ ঘটনায় প্রক্টরিয়াল দলের এক শিক্ষককে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটিও করা হয়। অবশ্য ছাত্রলীগের নেতাদের ছাত্রী নিপীড়নের অভিযোগের ঘটনার তদন্তেও একটি কমিটি করেছে প্রশাসন।

খবর পেয়ে রাতেই শুরু হয় বিক্ষোভ। রাজু ভাস্কর্যের সামনে কিছু আন্দোলনকারী অবস্থান নেন। তাঁদের মধ্যে দুজন নিজেরা প্ল্যাকার্ড লিখে নিজেদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সেখানেই বসে পড়েন। তাঁরা প্ল্যাকার্ডে লেখেন, ‘আমি ভাঙচুরকারী আমাকে গ্রেপ্তার কর’, ‘আমি আন্দোলনকারী আমাকে গ্রেপ্তার কর’। তাঁরা হলেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের রাজীব কুমার দাশ এবং অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের মাহির শাহরিয়ার। রাত দুইটা থেকে তাঁরা গতকাল বিকেলে মশাল মিছিল শুরু হওয়া পর্যন্ত সেখানেই বসে থাকেন।

রাজীব কুমার দাশ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমিও ওই দিনের ঘটনায় ভাঙচুর করেছি, আন্দোলন করেছি। প্রশাসন, পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করুক। বিশ্ববিদ্যালয় নিপীড়কদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এই প্রক্টরের পদত্যাগ চাই।’ রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার দাবিতে ১১ জানুয়ারি থেকে আন্দোলনে নামেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। গত সোমবার বিকেলে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের সময় ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল শাখার নেতা-কর্মীরা আন্দোলনরত ছাত্রদের হুমকি-ধমকি এবং ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও গালাগাল করেন। তাঁরা আন্দোলনের সমন্বয়কারী মশিউর রহমানকে উপাচার্যের কার্যালয়ে মারধর করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাঁকে থানায় সোপর্দ করে।

শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (রোববার) প্রতিবেদন প্রকাশের সময় বেঁধে দেন। সেই সময় শেষ হবে কাল রোববার। শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহদী বলেন, ‘আমরা ছাত্রী নিপীড়নের বিচার চাইতে গিয়েছি। কিন্তু প্রশাসন আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করে নিপীড়নকারীদের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে। আমরা অধিভুক্ত সমস্যার সমাধানও চাই, নিপীড়নকারীদের বহিষ্কারও চাই।’

পোস্টটি শেয়ার করুন
Share

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ...