আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রেকর্ডের বরপুত্র বলা হতো ক্যারিবিয়ান গ্রেট ব্রায়ান লারাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই বিশেষণটি তামিম ইকবালের নামের পাশে সহজেই মানিয়ে যায়। বাংলাদেশের পক্ষে ব্যাটিংয়ের সিংহভাগ রেকর্ডই এ বাঁহাতি ওপেনারের দখলে।
গতকাল মঙ্গলবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে দুটি রেকর্ডে নাম লিখিয়েছেন তামিম। এদিন ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৬ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন তিনি। গৌরবের এ মাইলফলক পার হওয়ার আগে গড়েছেন আরেকটি বিশ্বরেকর্ড। ওয়ানডেতে এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রানের দৌড়ে সনাথ জয়াসুরিয়াকে টপকে শীর্ষে এখন তামিম। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তার সংগ্রহ এখন দুই হাজার ৫৪৯ রান। ৭৬ রানের ইনিংস খেলে গতকাল ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটের দুটিতেই এখন বাংলাদেশের পক্ষে শীর্ষ রান সংগ্রহকারী তামিম। টেস্টে ৩ হাজার ৮৮৬ রান, ওয়ানডেতে ৬ হাজার ১০ রান তার। টি- টোয়েন্টিতে সাকিবের ১ হাজার ২২৩ রানের পরই আছেন ১ হাজার ২০২ রান করা তামিম। টেস্টে আটটি, ওয়ানডেতে নয়টি সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশের সেরা সেঞ্চুরিয়ানও তিনি। টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশের হয়ে একমাত্র সেঞ্চুরি এ বাঁহাতির।
এত রেকর্ডের অধিকারী তামিম গতকাল খেলতে নামার আগে ওয়ানডেতে ছয় হাজার রানের মাইলফলক থেকে ৬৬ রান দূরে ছিলেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৭৬ রানের ইনিংসেই নাম লেখান ছয় হাজারী ক্লাবে। ওয়ানডের ইতিহাসে ৫৫তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ছয় হাজার রান করলেন তামিম। ১৭৭ ম্যাচে তামিমের ঝুলিতে এখন ছয় হাজার ১০ রান রয়েছে। বাংলাদেশের শীর্ষ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় তামিমের পরই আছেন সাকিব আল হাসান। তার সংগ্রহ পাঁচ হাজার ২৩৫ রান। চার হাজার ৬৭০ রান নিয়ে তৃতীয় স্থানে মুশফিকুর রহিম। আশরাফুল তিন হাজার ৪৬৮, মাহমুদউল্লাহ তিন হাজার ২৪৪ রান নিয়ে চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছেন।
গতকাল লঙ্কান গ্রেট জয়াসুরিয়াকে টপকে ওয়ানডে ক্রিকেটে এক ভেন্যুতে সর্বোচ্চ রান এখন তামিমের। ১৯৯২ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ৭১ ম্যাচে ৩৮.৬৭ গড়ে দুই হাজার ৫১৪ রান করেছিলেন জয়াসুরিয়া। গতকাল সাবেক লঙ্কান ওপেনারকে ছাড়িয়ে যেতে ৪২ রান দরকার ছিল তামিমের। মিরপুর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ইনিংসের ২৪তম ওভারেই ওই রান পেরিয়ে যান তিনি। এ মাঠে তামিমের সংগ্রহ এখন দুই হাজার ৫৪৯ রান। ওয়ানডেতে এক মাঠে দুই হাজারের বেশি রান আছে আট ব্যাটসম্যানের। যে তালিকায় তামিম ছাড়াও বাংলাদেশের সাকিব ও মুশফিক রয়েছেন।
গতকাল অর্জন করা দুটি রেকর্ড সম্পর্কেই জানা ছিল তামিমের। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে ২৮ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘অবশ্যই ভালো লাগে। আমি জানতাম অবশ্য ম্যাচের আগে যে আমার দুইটা রেকর্ডের জন্য কত রান লাগবে। এটা পূরণ করতে পারলে সবসময়ই ভালো লাগে। একই মাঠে এত রান আরেকটা হলো ছয় হাজার রানের মাইলস্টোন। আমি আগের প্রেস কনফারেন্সেই বলেছিলাম, আমি এটা উদযাপন করবো। যে কোনো অর্জনই উদযাপন করা উচিত। তবে আমি মনে করি, একই ভেন্যুতে বেশি রান করার রেকর্ডটি একজন বাংলাদেশি হিসেবে আমার কাছে বেশি এগিয়ে থাকবে।’