১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | সকাল ৭:১৬
Home / প্রচ্ছদ / বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সফল হবে না: আমু

বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র সফল হবে না: আমু

শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, একদিকে মনে হয় সবকিছু ঠিকঠাক আছে; অন্যদিকে চলছে ষড়যন্ত্র। এই ষড়যন্ত্র বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। তবে এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। দুনিয়ার অন্যান্য দেশে যেভাবে জাতীয় নির্বাচন হয়, বাংলাদেশেও সংবিধান অনুযায়ীই নির্বাচন হবে। জাতীয় নেতা শহীদ এম. মনসুর আলীর ১০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘শহীদ এম মনসুর আলী স্মৃতি সংসদ’ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্বকারী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও শহীদ মনসুর আলীর পুত্র মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ সরকারের মেয়াদ আর নয় মাসের মতো আছে। সামনে অগ্নিপরীক্ষা। নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন করে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। এই নির্বাচন ভন্ডুলের চেষ্টা করা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দল দেশের প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও গ্রামে-গঞ্জে নামবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পানিসম্পদ মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, শেখ হাসিনা ১৪ বছর প্রধানমন্ত্রী থেকে দেশের যে অগ্রগতি সাধন করেছেন, মানুষের চিন্তা-চেতনায় যেই পরিবর্তন ঘটিয়েছেন, দেশ ও মানুষের উন্নয়নে যে অবদান রেখেছেন- তা কখনও ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যাবে না। এমনকি তাকে হত্যা করা হলেও ইতিহাস থেকে তাকে মুছে ফেলা যাবে না। যেমনভাবে ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলা সম্ভব নয়।

পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে একটি স্বাধীন দেশ দিয়ে গেছেন, আর তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। মাথাপিছু আয় ১৬০০ ডলারে নিয়ে গেছেন। আজ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, তা অতীতের তুলনায় আকাশ-পাতাল ব্যবধান। সেজন্য বিশ্বও আজ স্বীকার করছে, এই জাতি টিকে থাকার জাতি। সবাই আজ বাংলাদেশের সাফল্য স্বীকার করছেন। এই চলার পথ এবং অগ্রগামী বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে নিতে পারবে না। কারণ নতুন প্রজন্ম অনেক মেধাবী ও তথ্য-প্রযুক্তির সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত। আরেক বিশেষ অতিথি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, শহীদ মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতা কখনো আদর্শের সঙ্গে আপোষ করেননি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত নয় বছরে দেশ অনেকদূর এগিয়ে গেছে।

শেখ হাসিনার সরকার না থাকলে দেশ অন্ধকারে চলে যাবে: আমু

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমির হোসেন আমু আরো বলেন, ’৭৫ এর খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। তারা শেখ হাসিনাকেও বারবার হত্যার চেষ্টা করেছে। আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বলেই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোলমডেল। শেখ হাসিনার সরকার না থাকলে পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে না, সব মেগাপ্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে, দেশ আবারও অন্ধকারে পেছনে চলে যাবে। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী যেই নির্বাচন হবে সেটিই হবে সবচেয়ে স্বচ্ছ। আপনারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রমাণ করুন স্বচ্ছ হয় কী হয় না। আর সংবিধান অনুযায়ী হলেই নির্বাচন যে স্বচ্ছ হয়-আমরাও সেটা প্রমাণের চেষ্টা করবো।

শহীদ এম মনসুর আলী সম্পর্কে শিল্পমন্ত্রী বলেন, জাতীয় চার নেতার মধ্যে মনসুর আলী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে প্রিয় ও আস্থাভাজন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রম মন্ত্রী; আর মনসুর আলী ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বঙ্গবন্ধু যখন মন্ত্রিত্ব ছেড়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হন তখন বঙ্গবন্ধুর শিল্প, বাণিজ্য ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব মনসুর আলীকেই দেয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে মনসুর আলীকে বাকশালের সাধারণ সম্পাদকও করেন বঙ্গবন্ধু।

সংলাপের নামে ষড়যন্ত্রের চেষ্টা: নাসিম

সভাপতির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, শত্রু আজ চিহ্নিত। খুনি-রাজাকারদের প্রশয়দাতা খালেদা জিয়া। নির্বাচন নিয়ে সংলাপ দুনিয়ার কোথায় হয়? নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। সংলাপের কথা বলা হচ্ছে একটা উদ্দেশে-সেটা হলো ষড়যন্ত্র। এদেশে কোনো সংলাপ সফল হয়েছে? ’৯১, ’৯৫ ও ২০০৬ সালের সংলাপ ব্যর্থ হয়েছে। এখনো বিএনপির এই সংলাপের কথার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। তারা ভাবছে সংলাপ ব্যর্থ হবে, আর তখনই চক্রান্তকারীরা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের সুযোগ পাবে। আমরা সংলাপে বিশ্বাস করি না। খুনিদের সঙ্গে সংলাপ হবে না। যারা সংলাপের কথা বলে তারা মতলববাজ। শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে, এর ব্যত্যয় ঘটবে না।

নাসিম বলেন, শহীদ মনসুর আলীসহ জাতীয় চার নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আজীবনের সহচর। তারা বঙ্গবন্ধুর জীবনেও সহচর ছিলেন, মরণেও সহচর হয়েছেন।

ভূ-রাজনীতি পরিবর্তন হয়ে গেছে: আনোয়ার হোসেন মঞ্জু

পানিসম্পদ মন্ত্রী ও জাতীয় পার্টি-জেপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, ভূ-রাজনীতি পরিবর্তন হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় বিশ্বে দুটি পরাশক্তি ছিল। আজ কোনো পরাশক্তি আছে বলে কেউ মনে করে না। যার কারণে উত্তর কোরিয়াও আজ চোখে চোখ রেখে কথা বলছে এবং উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করতে হচ্ছে। বিদেশি শক্তির দ্বারা অনেক দেশে সরকারের বদল ঘটেছে। বঙ্গবন্ধু এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন, তার নেতৃত্বেই সেই সংগ্রাম হয়েছিল। মন্ত্রী বলেন, এখন আঞ্চলিক শক্তিগুলোও অনেক শক্তিশালী। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সময় এই শক্তিগুলো এতটা শক্তিশালী ছিল না। অর্থনৈতিক দিক থেকে এই এশিয়া বা পূর্বাঞ্চল যেভাবে এগিয়ে গেছে সেটিকে এড়ানো সম্ভব নয়। তবে আমাদের রাজনৈতিক ধৈর্যের প্রয়োজন রয়েছে, সম্মান প্রদর্শনের দরকার আছে।

শহীদ মনসুর আলী নেতার প্রতি অনুগত ছিলেন: পূর্তমন্ত্রী

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পূর্তমন্ত্রী মোশাররফ হোসেন বলেন, শহীদ মনসুর আলী নেতার (বঙ্গবন্ধু) প্রতি ছিলেন অনুগত। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে তিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেননি। বাঙালি জাতির বিশ্বস্ত এমন একজন নেতাকে ৩ নভেম্বর কারাগারে নির্মমভাবে হত্যা করা হলো। আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, শহীদ মনসুর আলীর দৌহিত্র তানভির শাকিল জয় প্রমুখ।

পোস্টটি শেয়ার করুন
Share

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

ঢাকা জেলা আ. লীগের সম্মেলনের মঞ্চ প্রস্তুত, আসছেন নেতাকর্মীরা

আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে ...