কারাগারে বন্দি থাকা অবস্থায় সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের রোপন করা কথিত বরই গাছের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে জানিয়েছেন তিনি নিজে। বরই গাছের বিষয়টি রসিকতা বা ঠাট্টা করেছিলেন বলেও জানান এরশাদ।
১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে গণআন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছাড়ার পর এরশাদকে কারাগারে নেয়া হয়। পরে দুর্নীতির মামলায় তার সাজাও হয়। ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি তিনি জামিনে মুক্ত হন।
তখন থেকেই কারাগারে এরশাদের বরই গাছ রোপনের বিষয়ে কথা ছড়ায়। দুর্নীতির মামলায় সাজা পাওয়ার পর গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে আবার কথা উঠে। রায়ের দিনই জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সদস্য ইয়াহিয়া চৌধুরী এরশাদের রোপন করা গাছের বরই খালেদা জিয়াকে খাওয়ানোর অনুরোধ করেন।
তবে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুই দিনের সফরে নিজ এলাকা রংপুরে যাওয়া এরশাদ সার্কিট হাউজে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওটা আমি ঠাট্টা করেছি। কোন রুমে ছিলাম মনে নেই।’
খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘রাজনীতি করতে হলে জেলে যেতে হয়, এটা নতুন কিছু নয়। তবে উনি (খালেদা জিয়া) কী কারণে জেলে গেছেন, কেন গেছেন, কী অপরাধ ছিল তা নিয়ে কোন কথা বলব না। সেটা আদালত ভালো বলতে পারবে।’
খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন নয়-বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের যুক্তি নেই বলেও মনে করেন এরশাদ। ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে কারাগারে থেকে পাঁচটি করে আসনে জেতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমিও তো জেলে থেকে নির্বাচন করেছি। ২৫টি আসন পেয়েছি। ইতিহাস তো আছে।’
‘নির্বাচন সময় মতো হবে, সংবিধান মতো হবে। কোন ব্যাত্যয় হবে না। নির্বাচনে দুটো দল থাকলে নির্বাচন হয়। আমরা তো আছি, আওয়ামী লীগ তো আছে। কেউ আসুক আর না আসুক নির্বাচন হবে।’
‘আমি নির্বাচন করব। জাতীয় পার্টি নির্বাচন করবে। আমাদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় যাওয়া। তিনশ আসনে প্রার্থী দিয়েছি। আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
বিএনপির নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টিতে আসার চেষ্টা করছে কি না- এমন প্রশ্নে এরশাদ বলেন, ‘জাতীয় পার্টিতে এখন পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। তবে সে যদি শিক্ষিত হয়, ভালো হয় তাহলে নেব।’
দলের কো-চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী মসিউর রহমান রাঙ্গা, রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ স্থানীয় নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।