১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | বিকাল ৪:৩৯
Home / প্রচ্ছদ / এইচএসসি পরীক্ষায় নতুন ‘কিছু পদ্ধতি’ আসছে: শিক্ষামন্ত্রী

এইচএসসি পরীক্ষায় নতুন ‘কিছু পদ্ধতি’ আসছে: শিক্ষামন্ত্রী

চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস রোধে নেয়া শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সব চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষায় নতুন ‘কিছু পদ্ধতি’ আসছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

শুক্রবার এফডিসি মিলনায়তনে নবম জাতীয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা ‘বিতর্ক বিকাশ’ এর গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা জানান। তবে কী সেই বিশেষ পদ্ধতি তার কোনো ব্যাখ্যা দেননি।

এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাতে না পারার মধ্যেই আগামী ২ এপ্রিল থেকে শুরু হতে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এইচএসসি। মন্ত্রী জানান, এই পরীক্ষায় প্রশ্ন যেন ফাঁস না হয়, সে জন্য কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

‘আমরা চেষ্টা করছি। অতি অল্প সময়ে বড় পরিবর্তনে যাব না, সেখানেও কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছি যেগুলো আগে নিইনি। এতে আশা করছি বেশি কার্যকর হবে।’

আগামী বছর এসএসসি পরীক্ষায় আরও বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী। তবে এইচএসসির ‘কিছু পদ্ধতির’ এর মতো আগামীতে পরীক্ষায় ‘বড় পরিবর্তন’ এর বিষয়েও বিস্তারিত কিছু বলেননি মন্ত্রী।

প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে অতিরিক্ত প্রচারের দাবি

চলমান এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে প্রচার বেশি হয়েছে দাবি করে শিক্ষামন্ত্রী দাবি করেন, এসব প্রশ্ন পরীক্ষার্থীদের কাছে সেভাবে পৌঁছেনি।

মন্ত্রী বলেন, ‘ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার হলে ৩০ মিনিট আগে ঢুকিয়ে ফেলছি। প্রশ্নের খাম খোলার সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩০ মিনিট আগে। তার পরেও কেউ না কেউ একটা স্টেপ নিয়ে প্রচার করে দিচ্ছে।’

সরকার বসে নেই জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘কাজটা করতে হবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে। তারাও আমাদের সাথে আছে। সব মিলিয়ে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

প্রশ্ন ফাঁস সমস্যা সমাধানে সবার সহযোগিতাও চাইলেন মন্ত্রী। বলেন, ‘আমি শিক্ষক, অভিভাবকসহ সবার সহযোগিতা চাইছি, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। এইসব কাজে যারা বাধার সৃষ্টি করে তাদের চিহ্নিত করে আইনের হাতে সোপর্দ করুন।’

প্রশ্ন ফাঁসে নিজের দায় এড়িয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেড় লাখ মানুষ প্রশ্নপত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকেন। মন্ত্রী, সচিব বা বোর্ড চেয়ারম্যানের প্রশ্ন দেখার সুযোগ নেই। কিন্তু ওই দেড় লাখ মানুষের প্রশ্ন দেখার সুযোগ আছে। এদের একজনও যদি তার মূল্যবোধকে বিক্রি করে দেন, তাহলেই বিরাট সর্বনাশ হয়ে যায়।’

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসএসসি পরীক্ষার প্রায় প্রতিটি বিষয়ের এমসিকিউ এর প্রশ্ন আগেভাগেই এসেছে সামাজিক মাধ্যমে। প্রশ্ন ফাঁস রোধে এক সপ্তাহ আগে থেকে কোচিং সেন্টার বন্ধ করে দেয়া, পরীক্ষা কেন্দ্রে স্মার্ট ফোন নিষিদ্ধ করা, কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কারও ফোন নেয়া নিষিদ্ধ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এর কোনো পদ্ধতিই কার‌্যকর প্রমাণ হয়নি।

আবার ৪ ফেব্রুয়ারি প্রশ্ন ফাঁসকারীদেরকে ধরিয়ে দিলে শিক্ষামন্ত্রী পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করলেও সুফল মেলেনি। আরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ৩০০ নম্বর চিহ্নিত করে সেগুলো বন্ধ করলেও সেসব নম্বর কাদের, তা জানানো হয়নি।

তবে এবার এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে গ্রেপ্তারও হয়েছে অন্যান্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি। বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মন্ত্রী জানান, এই সংখ্যাটি ১৫৩। আর এই ঘটনায় মামলা হয়েছে ৫২টি।

যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের মধ্যে পরীক্ষার্থী, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, শিক্ষক, ব্যাংকারও রয়েছে। ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার একজন আবার যেসব ফেসবুক পেজে প্রশ্ন আসতো আর একটির অ্যাডমিন বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

তবে এদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যারা প্রশ্ন ফাঁস করে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করার জন্য দিত, তাদেরকে শনাক্ত বা ধরা যায়নি। যদিও পুলিশ গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ১৪ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পেরেছে, সকালে ট্রেজারি থেকে পরীক্ষার কেন্দ্রে প্রশ্ন পাঠানোর সময় ছবি তুলে তা পাঠানো হয় অ্যাডমিনদের কাছে।

তবে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার কথিত অ্যাডমিনও সেই ব্যক্তিদের সন্ধান দিতে পারেননি। আর সমস্যার মূলে যেতে না পাওয়ার কথাটি আজকের অনুষ্ঠানেও স্বীকার করেন শিক্ষামন্ত্রী।

এ সময় মন্ত্রী শ্রেণিকক্ষে যথাযথ নিয়মে পাঠদান নিশ্চিত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। সেই সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের পাশাপাশি বহির্জগত সম্পর্কেও জ্ঞানার্জনের পরামর্শ দেন তিনি। পড়াশোনার পাশাপাশি শারীরিক ও মানসিক দক্ষতার জন্য সাংস্কৃতিক চর্চারও তাগাদা দেন মন্ত্রী।

এবারের বিতর্ক প্রতিযোগিতার ফাইনালে বরিশালের বাবুগঞ্জের রাশেদ খান মেনন মডেল উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের ইসহাকপুর পাবলিক হাই স্কুল।

পোস্টটি শেয়ার করুন
Share

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত ফল নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ...