১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | সকাল ৭:৩৫
Home / অর্থনীতি ও বানিজ্য / দশম সংসদে কোরাম সংকটে ব্যয় ১২৫ কোটি টাকা

দশম সংসদে কোরাম সংকটে ব্যয় ১২৫ কোটি টাকা

ডেস্ক রিপোর্ট: দশম সংসদের প্রথম থেকে অষ্টাদশ অধিবেশন পর্যন্ত কোরাম সংকটে ব্যয় হয়েছে ১২৫ কোট ২০ লক্ষ ৬৯ লাখ ৬৯ হাজার ৪৪৫ টাকা। এসময় কোরাম সংকট হয়েছে ১৫২ ঘন্টা ১৭৮ মিনিট। যা সংসদ অধিবেশনের প্রকৃত সময়ের ১২ শতাংশ।

বৃহস্পতিবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি দশম জাতীয় সংসদের ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

টিআইবি তাদের গবেষণায় দেখিয়েছে, সংসদ অধিবেশন পরিচালনা করতে প্রতি মিনিটে গড় ব্যয় এক লাখ ৬৩ হাজার ৬৮৬ টাকা। দশম সংসদের চতুর্দশ থেকে অষ্টাদশ অধিবেশনের (জানুয়ারি-ডিসেম্বর ২০১৭)কোরাম-সংকট অষ্টম ও নবম সংসদের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এসময়ে কোরাম-সংকট ছিল ৩৮ ঘণ্টা তিন মিনিট। এর অর্থমূল্য ৩৭ কোটি ৩৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৩৮টাকা।

দশম সংসদের চতুর্দশ থেকে অষ্টাদম অধিবেশনের মোট ৭৬ কার্যদিবসের উপস্থিতির তথ্য বিশ্লষণ করে টিআইবি জানায়, সার্বিকভাবে সংসদ সদস্যদের গড় উপস্থিতি প্রতি কার্যদিবসে ৩০৯ জন, যা মোট সদস্যের ৮৮ শতাংশ। এতে সময় ব্যয় হয় ২৬০ ঘণ্টা ৮ মিনিট। কার্যদিবস প্রতি গড় বৈঠককাল প্রায় ৩ ঘন্টা ২৫ মিনিট। সবচেয়ে বেশি ২৫.৬ শতাংশ বাজেট আলোচনায় ব্যায়িত হয়। অন্যান্য পর্বের মধ্যে আইন প্রণয়নে ৯ শতাংশ, প্রশ্নোত্তর পর্বে মোট ১৪.১ শতশাংশ সময়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিরোধী দল সরকারের অংশ হয়ে গেছে একথা আমরা আগেই জানিয়েছি। এটা এখন প্রমাণিত। কারণ বিরোধীদলের সংসদ সদস্যরাই এখন এটা স্বীকার করছেন।

টিআইবি জানায়, সংসদ অধিবেশনে অসংসদীয় ভাষার ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে। মোট সময়ের ৫ শতাংশ এর পেছনে ব্যয় হয়েছে। যার বিষয়ে রুলিং দেননি স্পিকার।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে প্রধান বিরোধী দলের সভাপতিকে ২০১৪ সালে নিয়োগ দেয়া হলেও কোনও দাপ্তরিক আদেশ অথবা গেজেট প্রকশ হয়েছে এমন কোনও তথ্য টিআইবি পায়নি। বিশেষ দূত হিসেবে তাকে দায়িত্ব পালন করতেও দেখা যায়নি। কিন্তু প্রতি মাসে তার পেছনে ৫লাখ টাকা ব্যায় হচ্ছে।

টিআইবির চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, সংসদ সদস্যদের প্রধান কাজ আইনপ্রনয়ন করা। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, এ কাজে মোট সময়ের মাত্র ৯ শতংশ ব্যবহার হয়েছে। আর প্রতি আইন পাসে মাত্র ৩৫ মিনিট সময় আলোচনা হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এ উপদেষ্টার মতে, সরকার ও সরকার প্রধানের জনপ্রিয়তা ও প্রশংসায় অনির্ধানিত আলোচনার ১০ শতাংশ সময় ব্যায় হয়। আর প্রতিপক্ষের সমালোচনা ও নিন্দায় ২৬ শতাংশ সময় ব্যয় হয়। অথচ আইন প্রনয়নে মাত্র ৯ শতাংশ সময় ব্যয় হওয়া উদ্বেগজনক।

টিআইবির তথ্য মতে, প্রতিবেশি দেশ ভারতে একটি আইন পাসে ২ ঘন্টা ১০ মিনিট আলোচনা হয় সংসদে।

তিনি বলেন, যাদের জন্য আইন, সেই জনগণ কিন্তু অনেক সময় ভালোভাবে জানেনই না কি আইন পাস হচ্ছে ও বৈদেশিক কী চুক্তি হচ্ছে। এটা কিন্তু জনগণকে জানানো উচিৎ সরকারের।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সুলতানা কামাল বলেন, ১৯৯০ সালে আমরা মুক্ত নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করেছি। ‘আমার ভোট আমি দিব, যাকে খুশি তাকে দিব’ এটা ছিল আন্দোলনের স্লোগান। কিন্তু এখন দেখা যায় অনেক মানুষ মনেই করছে না তাদের ভোটাধিকার রয়েছে।

গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোরশেদা আত্তার, নিহার রঞ্জন রায়, অমিত সরকার।

পোস্টটি শেয়ার করুন
Share

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

চীনের সঙ্গে এমওইউ সই করেও ঋণ নিইনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী

২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিন পিংয়ের ঢাকা সফরে ২৭টি চুক্তি ও ...