১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ | ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | রাত ৮:২০
Home / জাতীয় / সিলেট রেলপথ আধুনিকায়ন হচ্ছে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়া যাবে

সিলেট রেলপথ আধুনিকায়ন হচ্ছে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়া যাবে

ডেস্ক রিপোর্ট: শতবর্ষ পরে আখাউড়া-সিলেট রেলপথ আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। মিটার গেজ রেলওয়ের পাশাপাশি ডুয়েলগেজ ট্র্যাক নির্মাণ এবং স্টেশনগুলোর উন্নয়ন করা হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার পর ঢাকা থেকে সিলেট যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪ ঘন্টা। ইতিমধ্যে ২০১৭-২০১৮ সালের রিভাইজড বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে এই প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে চীন অর্থায়নে সম্মত হয়েছে। সিলেট-আখাউড়া সেকশনে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৫ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীন দিবে ১০ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা । সরকারি কোষাগার থেকে দেয়া হবে ৫ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা।

প্রকল্পটি অনুমোদনের জন্য গত সোমবার পরিকল্পনা কমিশনে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) এশিয়া উইংয়ের যুগ্মসচিব ড. একেএম মতিউর রহমান। মতিউর রহমান জানান, আগামী চার বছরের মধ্যে এই প্রকল্প বাস্তবায়নের টার্গেট রাখা হয়েছে। এটা বাস্তবায়িত হলে মানুষের যাতায়াতের ব্যবস্থা দ্রুততর হওয়ার পাশাপাশি পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা ঘটবে। চার ঘন্টায় ঢাকা থেকে সিলেট যাওয়া যাবে। ড. মতিউর রহমান জানান, উপ-আঞ্চলিক ও আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের সমপ্রসারণ, পণ্য পরিবহন, যাত্রী বহনের জন্য ভবিষ্যত্ সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যে আখাউড়া-সিলেট রেলপথটি ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রতিবেশী দেশের সাথে পণ্য পরিবহনের পথ সুগম হবে। একই সাথে বাণিজ্যও বাড়বে।

এ বিষয়ে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, আখাউড়া-সিলেট রেলপথটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি ডাবল লাইন হলে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে সময় কমবে। জানা গেছে, আখাউড়া-সিলেট রেলপথটি ডুয়েলগেজ করা না গেলে ট্রান্স এশিয়ান রেল নেটওয়ার্কের সুফল মিলবে না। প্রকল্পের আওতায় ২২৫ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েলগেজে রূপান্তর করা হবে। এ ছাড়া ২৮২টি সেতু বা কালভার্ট ব্রডগেজ স্ট্যান্ডার্ডে আবার নির্মাণ করবে রেলওয়ে। এই রুটে থাকবে ৩৪টি স্টেশন। জানা গেছে, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্কের অন্যতম রুট আখাউড়া-কুলাউড়া-শাহবাজপুর সেকশনটি। এ রেলপথের সর্বোচ্চ গতিসীমা ৭০ কিলোমিটার। এর ফলে ঢাকা-সিলেট যাতায়াতে সময় লাগে ৭ ঘণ্টা। আর চট্টগ্রাম যেতে লাগে প্রায় ১০ ঘণ্টা। তাই এ রেলপথটি ডাবল লাইন হলে ট্রেনের গতিসীমা হবে ১২০ কিলোমিটার। এতে করে ভ্রমণ সময় কমবে দুই থেকে তিন ঘণ্টা।

জানা গেছে, আখাউড়া-সিলেট সেকশনে অন্তর্ভুক্ত এই অংশটি কুলাউড়া থেকে শাহবাজপুর পর্যন্ত বিস্তৃত। আখাউড়া-কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথটি ট্রান্স-এশিয়ান রেল রুটের অন্তর্ভুক্ত। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশে রেলওয়ের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য তিন প্রকল্পে চীন দুই দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতা প্রদান করবে। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আখাউড়া-সিলেট রেলপথ আধুনিকায়ন হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক।

প্রসঙ্গত যে,আখাউড়া-সিলেট রেললাইনটি ডাবল লাইনে রূপান্তর করার উদ্যোগ নেয়ার অনুরোধ জানিয়ে দেড় বছর আগে বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। চিঠিতে তিনি বলেন, সুফি আউলিয়ার পুণ্যভূমিখ্যাত সিলেট বাংলাদেশের সাতটি বিভাগের অন্যতম। নয়নাভিরাম পাহাড়বেষ্টিত সিলেট অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে চা বাগান, যা দেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রাখছে। পর্যটন, চা শিল্প, প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ সিলেট অঞ্চলের গুরুত্বকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রেলপথে দ্রুত পণ্যসামগ্রী পরিবহনে আখাউড়া-সিলেট রেল লাইনটি ডাবল লাইনে রূপান্তর করা অপিরহার্য। এরপরই মূলত এই প্রকল্পের গতি বাড়ে।

পোস্টটি শেয়ার করুন
Share

About admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

শুধু চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

শুধু চিকিৎসার মাধ্যমে ডেঙ্গু মোকাবিলা সম্ভব নয়। এজন্য সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার ...